এসএসসি পরীক্ষার তারিখ পুনর্নির্ধারণ করার দাবি
ডেস্ক রিপোর্ট:
এ বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার তারিখ পুনর্র্নিধারণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের দফতর সম্পাদক মিহির রঞ্জন হাওলাদার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানানো হয়।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ধর্মীয় এই অনুষ্ঠানের পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।
বিবৃতিতে পরিষদ বলেছে, সরস্বতী পূজার পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। দেবী আরাধনার দিন পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া এবং তার পরদিন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা হিন্দু সম্প্রদায়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পক্ষে সম্ভব নয়। পূজার পরদিনই পরীক্ষা নেয়ার বিষয়টি ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা’ ও ‘ধর্মীয় অনুভূতি ক্ষুণ্নের অপপ্রয়াস’ বলেও মনে করে পরিষদ।
এতে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ঘোষিত পরীক্ষার এ সময়সূচি বস্তুত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম হিন্দু ধর্মের প্রতি তুচ্ছতাচ্ছিল্যপূর্ণ মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ, যা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বহির্বিশ্বে খাটো করার চক্রান্তেরই অংশমাত্র।
বিবৃতিতে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের তিনজন সভাপতি ঊষাতন তালুকদার, নিম চন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও এবং সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার তারিখ পুনর্র্নিধারণ করার দাবি জানান। পাশাপাশি ঐক্য পরিষদ এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। দাবি মানা না হলে আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ থাকবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এ বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলা ১ম পত্র দিয়ে শুরু হবে। শিক্ষা বোর্ডের রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা শেষ হবে একই বছরের ১২ মার্চ। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩ মার্চ থেকে ২০ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।
চলতি বছর ১১টি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। গত বছর পরীক্ষা দিয়েছিল ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন। সে হিসাবে এবার পরীক্ষার্থী কমেছে ৪৭ হাজার ৯৭১ জন। এরমধ্যে ছাত্র কমেছে ২৮ হাজার ৩১৯ জন এবং ছাত্রী কমেছে ১৯ হাজার ৬৫২ জন।
এবার ২৯ হাজার ৭৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩৭০০টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের তুলনায় এবার পরীক্ষা কেন্দ্র কমেছে ১৮০টি এবং পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে ৬৩টি।
গত ২১ ডিসেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আবুল বাশার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে রুটিন প্রকাশ করা হয়। পূর্ণাঙ্গ পাঠ্যসূচি অনুযায়ী ২০২৪ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে পরীক্ষা চলবে দুপুর ১টা পর্যন্ত।
রুটিন অনুযায়ী ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলা প্রথম পত্র, সহজ বাংলা প্রথম পত্র ; ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলা দ্বিতীয় পত্র, সহজ বাংলা দ্বিতীয় পত্র ; ২০ ফেব্রুয়ারি ইংরেজি প্রথম পত্র; ২২ ফেব্রুয়ারি ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র; ২৫ ফেব্রুয়ারি গণিত; ২৭ ফেব্রুয়ারি ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্ট ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা; ২৮ ফেব্রুয়ারি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি; ২৯ ফেব্রুয়ারি গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, কৃষি শিক্ষা, আরবি, সংস্কৃত, পালি, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রিড়া, চারু ও কারুকলা; ৩ মার্চ পদার্থ বিজ্ঞান, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং; ৫ মার্চ রসায়ন, পৌরনীতি ও নাগরিকতা, ব্যবসায় উদ্যোগ; ৬ মার্চ ভূগোল ও পরিবেশ; ৭ মার্চ জীব বিজ্ঞান, অর্থনীতি; ১০ মার্চ বিজ্ঞান, উচ্চতর গণিত; ১১ মার্চ হিসাব বিজ্ঞান; ১২ মার্চ বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।