বাংলাদেশের চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত এবং নদী বন্দরে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি
প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’: বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা
প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কোথাও মাঝারি, আবার কোথাও ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় দানার গতিবেগ ঘন্টায় এখন ৯০ কিলোমিটার। এটি আজ মধ্যরাতে ভারতের পুরী ও সাগর দ্বীপের মাঝখান দিয়ে উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
সাগর উত্তাল থাকায় বাংলাদেশের চার সমুদ্রবন্দরে আগের মতোই ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত এবং নদী বন্দরে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান
ঘূর্ণিঝড় দানা সকালে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ছিল ৫৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। দুপুরে আরও এগিয়ে ৫৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। একইভাবে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে সকালে ছিল ৫৫৫ কিলোমিটার দূরে, এখন ৫৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে দূরে ছিল ৪৮৫ কিলোমিটার, এখন ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে। পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ছিল ৪৮৫ কিলোমিটার দূরে, এখন ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তি
পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আরও উত্তর- উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
আজ মধ্যরাত (২৪ অক্টোবর ২০২৪) নাগাদ পুরী ও সাগর দ্বীপের মাঝখান দিয়ে ভারতের উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (২৮৯ মিলোমিটার) বর্ষণ হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলাকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে।
জলোচ্ছ্বাস
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, বারিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু-তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
নদীবন্দর
দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া দেশের অন্য এলাকায় দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে