দেশ সেরা উপজেলা চেয়ারম্যান দাউদকান্দির মোহাম্মদ আলী
দেশ সেরা উপজেলা চেয়ারম্যান দাউদকান্দির মোহাম্মদ আলী
প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে বাংলাদেশের সেরা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী । তিনি আগামী ১২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে এ সম্মাননা পদক গ্রহণ করবেন।
সোমবার (৬ মার্চ) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এক পরিপত্র জারির মাধ্যমে এ তথ্য জানায়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়- ‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২২’ উপলক্ষে এবার তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশ সেরা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়েছে। আগামী ১২ মার্চ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে উপস্থিত থেকে এ পদক গ্রহণ করার কথা উল্লেখ করা হয়।
মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী চেয়ারম্যান হিসেবে টানা দুইবার দায়িত্ব পাওয়ার পর দাউদকান্দিতে প্রাথমিক শিক্ষার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। ইতোমধ্যে তিনি জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
ছাত্র-ছাত্রীদের বিনামূল্যে শতভাগ রঙিন বই নিশ্চিতকরণ, স্কুল ড্রেস, ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ, বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ, ইন্টারনেট সংযোগসহ নানা রকমের উন্নয়নমূলক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তিনি। এর ফলে উপজেলাটিতে শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ার হার শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। শতভাগ স্কুলে ল্যাপটপ, মডেম, ইন্টারনেট ব্যবস্থা রয়েছে।
তাঁর উদ্যোগে উপজেলায় শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে ২০১৬ সাল থেকে নিয়মিত খেলাধুলার পাশাপাশি জাতীয় সংসদ ভবন, ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু জাদুঘরসহ দেশের দর্শনীয়স্থানে শিক্ষাসফর চলমান রয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, কয়েক বছর যাবৎ সরকারি নির্দেশনায় দেশের অন্যান্য উপজেলার মত দাউদকান্দি উপজেলায় ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গের সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে ‘মিড ডে মিল’ কার্যক্রম চালু করা হয়েছিল। কিন্তু বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য শুধু স্থানীয় সহযোগিতায় মিড ডে মিল স্থায়ী করা যায় না। তাই মিড ডে মিল স্থায়ী করার লক্ষ্যে মেজর মোহাম্মদ আলী দাউদকান্দি উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ১ জানুয়ারি ২০১৭ সালে নতুন বই বিতরণের সময় প্রতিটি শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে ১টি করে টিফিন বক্স প্রদান করেন। ইতোমধ্যে তিনি শিক্ষার্থীদের ৩০,০০০ টিফিন বক্স বিতরণ করেছেন। নতুন টিফিন বক্স পাওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীদের বিরতির সময় বাড়িতে যাওয়ার প্রবণতা বন্ধ হয়েছে এবং তাদের দৈনিক উপস্থিতি সুনিশ্চিত হয়েছে।
দাউদকান্দি উপজেলার প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিদ্যুতায়ন করে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে পাঠদান করার পদ্ধতি চালু করাসহ প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের স্কুলগামী করতে অসামান্য আবদান রাখা, প্রতিটি বিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ, পর্যায়ক্রমে প্রতিটি বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট, প্রতিটি বিদ্যালয়ে শিশুদের বিনোদন ও খেলাধুলার সামগ্রী বিতরণসহ নানান অবদানের জন্য দাউদকান্দি উপজেলার চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো জেলায় শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান মনোনীত হন। ২০১৭ সালেও জেলায় এবং চট্টগ্রাম বিভাগের শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান পদকে ভূষিত হন তিনি। ব্যক্তিগত পর্যায়ে যে সকল ব্যক্তি ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকতা, জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষকদের জন্য নিয়মিত শিক্ষা পদকের ব্যবস্থা করেছেন তিনি। এ ছাড়া করোনার সময় তিনি দাউদকান্দি টোলপ্লাজা, উপজেলার বাস স্ট্যান্ড, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বাজারে করোনার সংক্রমণ রোধে ব্যাপক কাজ করেছেন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী দেশ রূপান্তরকে বলেন, স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নের বিকল্প নেই। তাই বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষার কল্যাণে কাজ করে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে এ উপজেলার সকল বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ, ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ গৌরব আমার একার নয়, আমার প্রাণপ্রিয় দাউদকান্দিবাসীর ভালোবাসা ও তাদের সহযোগিতায় আজ আমি দেশ সেরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। সৃষ্টিকর্তা আমাকে যতদিন বাঁচিয়ে রাখবে আমি দাউদকান্দি ও মেঘনা উপজেলাবাসীর সেবা করে যাবো ইনশাআল্লাহ।