আটকে গেল কুমিল্লার ৫ আসনে হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়ন
ডেস্ক রিপোর্ট:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাখিলকৃত মনোনয়ন যাচাই বাছাই চলছে। প্রথমদিনের বাছাইয়ে কুমিল্লার ৫টি আসনের আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল ও স্থগিত করা হয়েছে। তবে সেগুলো যৌক্তিক কারণেই বাতিল বা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান মনোনয়ন যাচাই-বাছাই করে তাদের প্রার্থীতা বাতিল করেন।
মনোনয়ন বাতিল হওয়া হেভিওয়েট এসব প্রার্থীদের মধ্যে কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-তিতাস) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুরের বিপরীতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ব্যারিস্টার নাঈম হাসানের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। মনোনয়ন পত্রে ১ শতাংশ গরমিল থাকার কারণে তার মনোনয়নপত্রটি বাতিল করা হয়। একই আসনে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হোসেন আকন্দেরও ১ শতাংশ গরমিল থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয় । এ আসনে মোট ১২ জন মনোনয়ন দাখিল করেন। যাচাই বাছাইয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুরসহ ৫ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। বাতিল করা হয় ৬ জনের মনোনয়ন। এছাড়াও স্থগিত করা হয় ১ জনের।
কুমিল্লা-২ (হোমনা-তিতাস) আসনে হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেন হোমনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ। কিন্তু যাচাই বাছাইয়ে হলফনামায় শনাক্তকারীর নাম না থাকায় তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়। এ আসনে আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী মেঘনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল আলমের মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়েছে। এ আসনে ১২ জন প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী, বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ মেরিসহ মোট ৩ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। বাতিল করা হয় ৬ জনের মনোনয়ন। এছাড়াও স্থগিত করা হয় ৩ জনের।
কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকারের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।মনোনয়নপত্রে ১ শতাংশ গরমিল থাকায় তার মনোনয়ন পত্রটি বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া আরেক হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রুহুল আমিনের মনোনয়নপত্রও বাতিল করা হয়েছে। এ আসনে মোট ১৪ জন মনোনয়ন দাখিল করেন। যাচাই বাছাইয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, বর্তমান সংসদ সদস্য ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনসহ ৪ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। বাতিল করা হয়েছে ৭ জনের। স্থগিত করা হয়েছে ৩ জন প্রার্থীর মনোনয়ন।
কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী, দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের সদ্য পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের মনোনয়ন স্থগিত করা হয়েছে। রিটার্নের সত্যায়িত কপি সংযুক্ত না করায় তার মনোনয়ন স্থগিত করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। আরেক হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী, শেখ রাসেল পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি ডা. ফেরদৌস আহমেদ খন্দকারের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। ১ শতাংশ গরমিল থাকায় মনোনয়ন পত্রটি বাতিল করা হয়। এ আসনে মোট ১৪ জন মনোনয়ন দাখিল করেন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলসহ ৬ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। বাতিল করা হয় ১ জনের আর স্থগিত করা হয় ৭ জন প্রার্থীর মনোনয়ন।
কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসনে হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বপনের মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে। এছাড়াও আরেক হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর খান চৌধুরীর মনোনয়নপত্রে ১ শতাংশ মিথ্যা পাওয়ায় তার মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে আরও এক হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ জাহেরের মনোনয়ন। এ আসনে মোট ১১ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম খানসহ ৬ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। বাতিল করা হয় ৫ জনের মনোনয়ন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান জানান, যাদের মনোনয়ন বাতিল বা স্থগিত করা হয়েছে, সেগুলো যৌক্তিক কারণেই বাতিল বা স্থগিত করা হয়েছে।