মেডিকেলে চান্স পেলেন বাবাহারা তিন যমজ ভাই

ডেস্ক রিপোর্ট:
বাবাহারা তিন যমজ ভাই একসঙ্গে জন্ম, একসঙ্গে বেড়ে ওঠা। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে পড়েছেন একই প্রতিষ্ঠানে। সবক্ষেত্রে তিনজনের ফলাফলও একই। যমজ তিন ভাই এবার চান্স পেয়েছেন চিকিৎসাশাস্ত্রে অধ্যায়নের। তবে আলাদা প্রতিষ্ঠানে।

inside-post

যমজ তিন ভাই হলেন- মফিউল হাসান, মফিউল হাসান ও রাফিউল হাসান। মফিউল হাসান গতবছর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়ে সেখানে পড়াশোনা করছেন। চলতি বছর শাফিউল ইসলাম দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও রাফিউল হাসান নোয়াখালী আব্দুল মালেক মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন।

বগুড়ার ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ি গ্রামের মৃত স্কুলশিক্ষক গোলাম মোস্তফার ছেলে তারা। মাত্র ছয় বছর বয়সে বাবা হারান অদম্য এ তিন মেধাবী। এরপর থেকে মা আর্জিনা বেগম কৃষি জমিতে আবাদ করে ছেলেদের পড়াশোনা করিয়েছেন। এমনকী তাদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করতে মা আর্জিনা বিক্রি করেছেন প্রায় চার বিঘা জমি।

যমজ এ তিন ভাই ২০২০ সালে ধুনট সরকারি নইম উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। এরপর বগুড়া সরকারি শাহ সুলতাল কলেজ থেকে ২০২২ সালে জিপি-এ ৫ পেয়ে এইচএসসিতে উত্তীর্ণ হন। তিন সহোদরের অভাবনীয় সাফল্যে শুধু বথুয়াড়ী গ্রাম নয়, গোটা উপজেলায় যেন আনন্দের জোয়ার বইছে।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বথুয়াবাড়ি গ্রামে গিয়ে কথা হয় যমজ তিন ভাইয়ের রত্নাগর্ভা মা আরজিনা বেগমের সঙ্গে। ছেলেদের সাফল্যে তিনি যে কতটা খুশি হয়েছেন তা তাকে দেখেই বোঝা গেলো।

আরজিনা বেগম জানান, তার স্বামী গোলাম মোস্তফা স্থানীয় মাঠপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি মারা যান। স্বামী মারা যাওয়ার পর তিন ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তিনি অকূল পাথারে পড়েন। পরে অনেকে ভেবেচিন্তে স্বামীর জমিজমা বন্দক রেখে ছেলেদের পড়ালেখার প্রতি মনোযোগী হন। মেয়ে মৌসুমী বগুড়া সরকারি আজিযুল হক কলেজে স্নাতকে অধ্যয়নরত।

আরজিনা বেগম বলেন, ‘আমার জমি না হয় শেষ হয়েছে তবুও এতিম ছেলে ও মেয়ে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার রাস্তায় দিয়েছি। তবে অভাব-অনটনের সংসারে মেয়ে মৌসুমীকে কীভাবে বিয়ে দেবেন এবং যমজ তিন ছেলের লেখাপড়ার খরচ কীভাবে বহন করবেন সেই চিন্তা তাড়া করে ফিরছে রত্নগর্ভা এ মায়ের।

আরো দেখুন