ইজতেমা ময়দানে সংঘর্ষের ঘটনায় যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
ডেস্ক রিপোর্ট:
গাজীপুরের টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখল ও জোড় ইজতেমাকে কেন্দ্র করে যোবায়ের ও সাদপন্থিদের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। নিহতরা হলেন আমিনুল ইসলাম বাচ্চু (৫৫), বেল্লাল হোসেন (৬০) ও তাইজুল ইসলাম(৭০)।
সংঘর্ষে হতাহতদের টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। আহতরা হলেন—আ. রউফ (৫৫), মজিবুর রহমান (৫৮), আ. হান্নান (৬০), জহুরুল ইসলাম (৩৮), আরিফ (৩৪), ফয়সাল (২৮), তরিকুল (৪২), সাহেদ (৪৪), উকিল মিয়া (৫৮), পান্ত (৫৫) টঙ্গী, খোরশেদ আলম (৫০) বেলাল (৩৪), আনোয়ার (৫০), আবু বক্কর (৫৯), আরিফুল ইসলাম (৫০), আনোয়ার (২৬), আনোয়ার (৭৬), ফোরকান আহমেদ (৩৫), আ. রউফ (৫৫) মজিবুর রহমান (৫৮), আ. হান্নান (৬০), জহুরুল ইসলাম (৩৮), আরিফ (৩৪), ফয়সাল (২৮), তরিকুল (৪২), সাহেদ (৪৪)।
এনিয়ে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) হাসনাত আব্দুল্লাহ সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের শান্ত ও ধৈর্য ধারণের অনুরোধ জানিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দিয়েছেন।
ফেসবুক পোস্টে হাসনাত লিখেছেন, সাদপন্থী সমর্থিত সচেতন ছাত্রসমাজের দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি এবং সকাল ১০টার মধ্যে মাওলানা সাদ সাহেবের ভিসার জন্য বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণার কারণে আমরা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সাদপন্থীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য টঙ্গী যাই। সেখানে আলোচনা শেষে তারা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন এবং মাওলানা সাদ সাহেবের ভিসা জটিলতা নিরসনে পুনরায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তবে তারা টঙ্গী ময়দানে জোড় ইজতেমার শর্ত দেন এবং ২৫ তারিখ মাঠ ছাড়ার প্রতিশ্রুতি দেন। টঙ্গীতে এই তিনটি বিষয়ে আলোচনা হয়।
তিনি লিখেন, আলোচনায় আমরা এটাও স্পষ্ট করি এগুলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। এ বিষয়ে কাকরাইলে মাওলানা জুবায়ের সাহেব এবং ওলামায়ে কেরামের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সে পর্যন্ত ধৈর্য ধরতে হবে। এই উদ্দেশ্যে রাত ২টায় কাকরাইলে আলোচনার জন্য যাই। সেখানে মাওলানা মাহফুজুল হক ও মাওলানা মামুনুল হকসহ অন্যান্য আলেমরা উপস্থিত ছিল। সেখানে পৌঁছানোর পর সাদপন্থীদের একজন মুফতি সাহেবের একটি পোস্ট আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়, যেখানে খণ্ডিত ভিডিও প্রচার করে বলা হয়েছে আমরা নাকি তাদের জোড় ইজতেমা করার অনুমতি দিয়েছি। এটি আমাদের সিদ্ধান্তের সম্পূর্ণ বিপরীত।
কাকরাইলে আলোচনাকালীন সেখানে আলেমদের উপস্থিতিতে আমরা তাদেরকে স্পষ্টভাবে জানিয়েছি যে, আমরা কোনো কর্তৃপক্ষ নই। আমরা আলোচনা করে কাকরাইল থেকে টঙ্গী গিয়ে কথা বলব এবং এরপর পারস্পরিক মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। আলোচনার মাঝেও সাদপন্থী ওই মুফতি সাহেবকে ফোন দিয়ে বলেছি, আপনারা যদি সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার আগে ইজতেমার ময়দানে প্রবেশ করেন, তাহলে আমাদের সঙ্গে আপনাদের সম্পর্ক থাকবে না। আমরা কাকরাইলে আলেমদের উপস্থিতিতে সাদপন্থীদের আরও বলেছি, কোনোভাবেই আপনারা ময়দানে প্রবেশ করবেন না এবং আমাদের নিয়ে যে ভিডিও প্রচার করেছেন, তা মুছে ফেলবেন।’
পোস্টে তিনি আরও লিখেন, কিন্তু এর আগেই এই নির্মম ঘটনা ঘটেছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। সব ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকে শান্ত ও ধৈর্য ধারণ করার জন্য অনুরোধ করছি। কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না করে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আহ্বান করছি। তাবলীগ একটি দ্বিনি ও ধর্মীয় ইস্যু। ফলে আমরা মনে করি, তাবলীগসহ ধর্মীয় বিষয়াদি উলামায়ে কেরামের মাধ্যমেই সুরাহা ও মীমাংসিত হবে। তবে সমগ্র বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা রক্ষার দায়ভার আমাদের প্রত্যেকটি নাগরিকের। দেশের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে শান্তিপূর্ণ সমাধান ও অবস্থানের জন্য আমরা সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবো।